হোটেল বা রেস্তোরাঁয় আপনি যেসব পনির দিয়ে তৈরি খাবার খান, সেগুলিতে আদৌ প্রকৃত পনির ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। এবার এই বিষয়েই কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রক। জানা গিয়েছে, শীঘ্রই একটি নির্দেশিকা জারি করা হতে পারে, যেখানে হোটেল এবং রেস্তোরাঁগুলিকে বাধ্যতামূলকভাবে জানাতে হবে তারা তাদের পরিবেশিত খাবারে দুধ থেকে তৈরি আসল পনির ব্যবহার করছে না স্টার্চ-তেল মেশানো অ্যানালগ পনির ব্যবহার করছে।
কী এই অ্যানালগ পনির?
অ্যানালগ পনির দেখতে ও খেতে অনেকটা আসল পনিরের মতো হলেও, এটি আদতে দুধ দিয়ে তৈরি হয় না। সাধারণত স্টার্চ, উদ্ভিজ্জ তেল ও বিভিন্ন রাসায়নিক মিশিয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়। দাম অনেক কম বলে বেশিরভাগ হোটেল-রেস্তোরাঁ এই অ্যানালগ পনির ব্যবহার করে, অথচ গ্রাহকদের কিছুই জানানো হয় না।
গ্রাহককে না জানিয়েই চলছে বিক্রি
ভোক্তা বিষয়ক সচিব নিধি খারে জানান, “অ্যানালগ পনিরকে ঐতিহ্যবাহী পনির হিসেবে পরিবেশন করা গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা। এটা রোখা দরকার।” তিনি আরও বলেন, হোটেল-রেস্তোরাঁকে তাদের মেনুতে স্পষ্টভাবে লিখে দিতে হবে কোন ধরনের পনির ব্যবহার করা হচ্ছে। এবং সেই অনুযায়ী খাবারের দাম নির্ধারণ করাও জরুরি।
স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ
অ্যানালগ পনিরে অনেক সময় নিম্নমানের তেল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। পনির সাধারণত নিরামিষাশীদের প্রোটিনের অন্যতম প্রধান উৎস। কিন্তু যখন তার মধ্যে ভেজাল মেশানো হয়, তখন সেই পুষ্টির মূল্য অনেকটাই নষ্ট হয়।
তদন্তে ভেজালের তথ্য ভয়ানক
সম্প্রতি নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডায় ৭০২টি খাদ্যপণ্যের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভেজাল পাওয়া গেছে পনিরে। প্রায় ৮৩% পনিরের নমুনা মানহীন বা ভেজালযুক্ত। এছাড়াও, দুধের ৪৩টি নমুনার মধ্যে ১৯টিই ছিল অনিরাপদ, আর ঘির ৩৮% নমুনাও মান পরীক্ষায় ফেল করেছে।
সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ
ইতিমধ্যেই FSSAI (ভারতীয় খাদ্য সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ) প্যাকেটজাত অ্যানালগ পনিরের গায়ে ‘দুগ্ধজাত নয়’ লেখা বাধ্যতামূলক করেছে। এবার সেই নিয়ম রেস্তোরাঁ ও হোটেলের ক্ষেত্রেও কার্যকর করার পরিকল্পনা চলছে।