সুগার বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ভাত কম খাওয়াই শ্রেয়। পুষ্টিবিদদের মতে, সাদা ভাতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) অনেক বেশি। ফলে এটি শরীরে খুব দ্রুত গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়। বেশি ভাত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা আচমকা বেড়ে যেতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ভাতের পরিমাণ কমানো অথবা বিকল্প খুঁজে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ভাতের বদলে কী খাবেন?
১. ব্রাউন রাইস:
সাদা ভাতের তুলনায় ব্রাউন রাইসে ফাইবার অনেক বেশি থাকে। এটি হজমে ধীরে হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বাড়িয়ে দেয় না। অনেক পুষ্টিবিদের মতে, সপ্তাহে কয়েক দিন ব্রাউন রাইস খাওয়া যেতে পারে, তবে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
২. ওটস:
ওটস একটি উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার, যার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। এটি খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে এবং ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় থাকে। সকালের জলখাবারে ওটস দুধ বা সবজির সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে।
৩. কুট্টু বা বাকহুইট:
বকউইট গ্লুটেন ফ্রি এবং প্রোটিন ও ফাইবারে ভরপুর। এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ভারতীয় রান্নায় এটি চচ্চড়ি বা খিচুড়ির মতো রূপে ব্যবহার করা যায়। আজকাল যে কোনও সুপারমার্কেটে এগুলি প্যাকেটজাত অবস্থায় পাওয়া যায়।
৪. রাগি:
রাগি একটি চমৎকার কম GI যুক্ত খাবার। এতে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও আয়রন থাকে। রাগির রুটি, দোসা বা উপমা তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে। এটি শুধু ডায়াবেটিস নয়, হাড়ের জন্যও উপকারী।
৫. জোয়ার ও বাজরা:
জোয়ার ও বাজরা উভয়ই কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত খাদ্য। এগুলো রুটির আকারে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে। বিশেষ করে ডিনারে ভাতের বদলে বাজরার রুটি খাওয়া ভালো।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ:
সুগার রোগীদের ভাত একেবারে ছেড়ে দিতে হবে, এমন নয়। তবে পরিমাণ, রান্নার পদ্ধতি ও সঙ্গত অন্যান্য খাবারের দিকে নজর রাখা জরুরি। সঙ্গে থাকতে হবে নিয়মিত শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত জলপান ও সময়মতো ওষুধ গ্রহণ। কার্বোহাইড্রেটের উৎস হিসেবে কম GI যুক্ত খাবার বেছে নিন এবং রোজকার ডায়েটে ফাইবার, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বির পরিমাণ বাড়ান।
মনে রাখবেন...
সুগারে ভাত খাওয়া উচিত কিনা, তা একাধিক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। তবে দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ থাকতে হলে ভাতের বদলে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বিকল্প বেছে নেওয়াই ভালো। পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন আনলেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।