Bihar Voter List Update: ভোটার তালিকা নিয়ে নয়া নির্দেশিকায় উত্তাল রাজনৈতিক মহল। বিহারে ভোটের আগে ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। তাতে আধার, ভোটার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা এমনকি এমজিএনরেগার জব কার্ডও ধোপে টিকছে না। তার বদলে ১১টি সুনির্দিষ্ট ডকুমেন্ট চাওয়া হচ্ছে। সেগুলি দেখাতে পারলে, তবেই ভোটার হিসেবে নাম গৃহিত হবে।
মমতা যা বলেছিলেন
উল্লেখ্য, এই নির্দেশিকা নিয়ে এর আগেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তাঁর অভিযোগ, বিহারে ভোটে এগুলি করা হচ্ছে বটে। তবে মূল নিশানা পশ্চিমবঙ্গ(2026 Bengal election)। গত মাসেই এই প্রসঙ্গে দিঘা থেকে তিনি বলেছিলেন, ‘এই নির্দেশিকার আসল টার্গেট বিহার নয়, বাংলা।’
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদেরও বিহারের এই প্রক্রিয়ার দিকে নজর রাখাটা জরুরি। সেখানে ঠিক কী কী নথি চাওয়া হচ্ছে?
বিহারে BLO-রা যে যে নথি চাইছেন(BLO document list)
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী এই নথিগুলি গ্রহণযোগ্য হিসাবে ধরা হবে—
সরকারি কর্মী বা পেনশনপ্রাপকের আইডি কার্ড
পাসপোর্ট
১ জুলাই ১৯৮৭-এর আগে ব্যাঙ্ক/পোস্ট অফিস/এলআইসি-র দেওয়া সার্টিফিকেট
সরকারি কর্তৃপক্ষের দেওয়া বার্থ সার্টিফিকেট
স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট
স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণ
বন অধিকার সার্টিফিকেট(Van Adhikar Certificate)
কাস্ট সার্টিফিকেট
NRC-র নথি
সরকার-প্রদত্ত জমি বা ঘরের পাট্টা পত্র
সরকার বা স্থানীয় সংস্থার ফ্যামিলি রেজিস্টার
আধার বা ভোটার কার্ডে আপত্তি কেন?
নির্বাচন কমিশনের মতে, এবার ভারতীয় নাগরিকত্ব ও স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য একটাই—অবৈধ বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া।
এর পরে পশ্চিমবঙ্গেও
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগেই বলেছিলেন যে, বিহারের পর বাংলাতেও এগুলি হবে। আদতে সেটাই লক্ষ্য কমিশনের। বিহার থেকে এই নয়া নিয়ম চালু হলেও এরপর পশ্চিমবঙ্গ, অসম, কেরল, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতেও এই নিয়মেই ভোটার লিস্ট সংশোধন হবে।
২ কোটির বেশি মানুষ বাদ পড়তে পারেন?
নয়া নিয়মে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, এই নয়া নিয়মে বিহারের প্রায় ২ কোটি নাগরিক ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারেন। অনেকের কাছেই শুধুমাত্র আধার, ভোটার আইডি বা ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে। অন্য় কোনও বিকল্প নথি নেই। ফলে নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন বলে দাবি বিরোধীদের।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, 'লক্ষ্য আসলে বাংলা'
গত মাসে দিঘায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে, মমতা সরাসরি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তাঁর বক্তব্য, 'এই নির্দেশিকার আসল টার্গেট বিহার নয়, বাংলা। পরিযায়ী শ্রমিক ও সাধারণ মানুষকেই নিশানা করা হচ্ছে। কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা না বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল কেন?'
কমিশনের নতুন ‘ডিক্লারেশন ফর্ম’-এ বলা হয়েছে, ভোটার তালিকা নতুন করে যাচাই করতে হবে। এবং তার জন্য নির্দিষ্ট শর্তাবলী মানতেই হবে।
২২ বছর পর বিহারে এমনটা হচ্ছে
নির্বাচন কমিশনের সিইসি জ্ঞানেশ কুমার জানিয়েছেন, প্রায় ২২ বছর পর বিহারে এভাবে আপাদমস্তক যাচাই করে ভোটার তালিকা পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য একটাই, শুধুমাত্র প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের তালিকাভুক্ত করা।
এই নয়া নিয়ম ভোটের আগে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য তুঙ্গে। বিরোধীদের আশঙ্কা, এর ফলে সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার খর্ব হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ ছয় রাজ্যে এই নিয়ম লাগু হলে, তার থেকে যে বড়সড় রাজনৈতিক ঝড় উঠবে, তা বলাই বাহুল্য।