নিজের কিছু খুঁত ঢাকতে, কিংবা নিজেকে আরও সুন্দর দেখাতে বর্তমান সময় বেশীরভাগ মেয়েরা মেকআপ ব্যবহার করেন। অনেকে আবার মনে করেন, মেকআপের সাহায্যে নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। চোখ, ঠোঁট থেকে শুরু করে মুখ, সব কিছুর জন্য রকমারি মেকআপের জিনিস পাওয়া যায় বাজারে। যত সময় যাচ্ছে, নতুন নতুন ব্র্যান্ডের আগমন হচ্ছে। একে অপরকে টেক্কা দিতে, অনেকে সংস্থা মেকআপে মেশাচ্ছে নানা রাসায়নিক।
ব্যবহারের আগে কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে, মেকআপ আপনার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে? যদি না হয়, তাহলে অবশ্যই ভেবে দেখুন। কারণ আপনার পছন্দের ক্রিম বা যে কোনও মেকআপ পণ্যে পারদের মতো কিছু বিপজ্জনক পদার্থ থাকতে পারে, যা ত্বক এবং স্বাস্থ্যের জন্য বিষাক্ত প্রমাণিত হতে পারে। এই ধরনের পণ্য শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। ভারত সরকার এই বিপদ থেকে বাঁচাতে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে। পারদ রয়েছে, এরকম সব পণ্য নিষিদ্ধ করতে চলেছে সরকার।
প্রসাধনী পণ্য নিষিদ্ধ হতে পারে
ভারত সরকার পারদযুক্ত প্রসাধনী পণ্য নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিতরিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, এই সিদ্ধান্তটি ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (DCGI)- র একটি বিশেষ কমিটির পরামর্শে নেওয়া হতে পারে। এই কমিটির গৃহীত এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হল, দেশ থেকে বিপজ্জনক এবং ক্ষতিকারক পারদযুক্ত প্রসাধনী পণ্যগুলি অপসারণ করা, সেগুলি দোকানে পাওয়া যায় বা অনলাইনে বিক্রি হয়। কমিটির গৃহীত এই পদক্ষেপটি বিশ্বজুড়ে নিরাপত্তা নিয়ম মেনে করা হয়েছে।
প্রসাধনীতে পারদ কেন বিপজ্জনক?
পারদ একটি বিষাক্ত ধাতু যা ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। এটি রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করলে, শরীরের ভেতরের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এই ধরণের পণ্য ব্যবহারের ফলে ত্বকে ব্রণ- ফুসকুড়ি, বিবর্ণতা, ত্বক পাতলা হওয়া, এমনকী মুখে দাগও দেখা দিতে পারে।
কোন প্রসাধনীতে বেশি পারদ থাকে?
যে কোনও পণ্য বা ক্রিম যা, আরও ফর্সা করার দাবি করে, অ্যান্টি এজিং পণ্য এবং চোখের মেকআপে পারদ থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এই জাতীয় পণ্যগুলি দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করা হয় এবং আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
বর্তমান নিয়ম কী?
বর্তমানে, ভারতে কিছু সৌন্দর্য পণ্যে অল্প পরিমাণে পারদ ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। চোখের মেকআপে ৭০ পিপিএম (প্রতি মিলিয়ন অংশ) পর্যন্ত পারদ থাকতে পারে। অন্যান্য সমস্ত প্রসাধনীতে কেবলমাত্র ১ পিপিএম পর্যন্ত পারদ ব্যবহার করার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু এখন সরকার ১ পিপিএমের বেশি পারদযুক্ত পণ্য সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে চায়। এর ফলে ভারত মিনামাটা কনভেনশনের মতো নিয়ম অনুসরণ করতে পারবে, যা পণ্য থেকে পারদের মতো বিষাক্ত পদার্থ নির্মূল করার জন্য বিশ্বজুড়ে কাজ করছে।