কসবা আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পেয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তের শরীরে নির্যাতিতা তরুণীর নখের আঁচড়ের চিহ্ন পেয়েছেন চিকিৎসকরা। পুলিশি সূত্র জানাচ্ছে, এটা থেকে স্পষ্ট আক্রমণের সময় নির্যাতিতার সঙ্গে অভিযুক্তের মধ্যে প্রবল ধস্তাধস্তি হয়েছিল। এদিকে অভিযোগকারিণীর বয়ানের সঙ্গে পারিপার্শ্বিক তথ্য়প্রমাণ হুবহু মিলে যাচ্ছে। পাশাপাশি আলিপুর আদালতে শুনানির সময় সরকারি আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনেন। তিনি আদালতকে জানান, নির্যাতিতাকে সুস্থ করতে ইনহেলার ব্যবহার করা হয়নি, বরং উদ্দেশ্য ছিল আরও বেশি নির্যাতন চালানো। এই বক্তব্য আদালতে শুনিয়ে সরকারি পক্ষ দাবি করে, মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র এবং তার দুই সহযোগী জ়াইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায় অত্যন্ত পরিকল্পিত ও নৃশংসভাবে এই অপরাধ ঘটিয়েছে।
ছাত্রীর উপর যাতে আরও নির্যাতন চালানো যায়, তাই তাঁকে ইনহেলার এনে দিয়েছিল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র৷ এতটাই বেপরোয়া ছিল সে৷ আদলতে শুনানি চলাকালীন এমনই অভিযোগ করেছেন সরকারি আইনজীবী৷ পাশাপাশি, নির্যাতিতার আইনজীবী আদালতে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন, ছাত্রীর আস্থা অর্জন করার পর বিশ্বাসভঙ্গ করে তাঁর উপরে নির্যাতন চালিয়েছে মনোজিৎ৷ কসবা কলেজ কাণ্ডে মঙ্গলবার আলিপুর এসিজেএম আদালতে পেশ করা হয় মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র সহ ধৃত চারজনকে৷ আদালত ৮ জুলাই পর্যন্ত তিন অভিযুক্তের পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি করে।
আদালতে সরকারি আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল জানান, মেডিক্যাল এবং পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ, সিসিটিভি-র ফুটেজ, সবই নির্যাতিতার বয়ানের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে৷ নির্যাতিতা তাঁর অভিযোগপত্রে আগেই জানিয়েছিলেন, নির্যাতনের সময় তিনি অসুস্থ বোধ করলে মনোজিৎ এবং তাঁর সঙ্গীরা তাঁকে ইনহেলারও কিনে এনে দিয়েছিল৷ এ দিন আদালতে সেই প্রসঙ্গের উল্লেখ করেন সরকারি আইনজীবী৷ মনোজিৎ কতটা বেপরোয়া ছিল তা বোঝাতে তিনি বলেন, ইনহেলার এনে দেওয়া হল যাতে নির্যাতিতার উপরে আরও অত্যাচার করা যায়৷ শুনানি চলাকালীন, সরকারি আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল বলেন, যখন ২৪ বছর বয়সী আইনের ছাত্রী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, তখন তাকে ইনহেলার দেওয়া হয়েছিল উদ্বেগের কারণে নয়, বরং যাতে সে সুস্থ হয়ে ওঠে এবং আবার ধর্ষণের শিকার হয়।
প্রসঙ্গত, জানা যাচ্ছে মনোজিতের শরীরে নখের আঁচড়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পুলিশি সূত্র জানিয়েছে, কেউ যখন প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে তখন এই ধরনের আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়। এর আগে, নির্যাতিতার মেডিকেল পরীক্ষাও ধর্ষণের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। যেখানে ডাক্তাররা বলেছিলেন যে অভিযুক্তের শরীরে কামড়ের চিহ্ন এবং নখের আঁচড় পাওয়া গেছে। এদিকে, ক্যাম্পাসের সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা যাচ্ছে যে অভিযুক্তরা নির্যাতিতা তরুণীকে কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।