IIM Joka Case Update: বান্ধবীদের ক্যাম্পাসে নিয়ে আসত পরমানন্দ, IIM জোকায় ধর্ষণ কাণ্ডেও মনোজিত্‍-মডেল?

আইআইএম জোকা কাণ্ডে তদন্তে এবার ৯ সদস্যের সিট গঠন করেছে রাজ্য সরকার। একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে বিশেষ তদন্তকারী দলটি। তারা কথা বলবেন নির্যাতিতার সঙ্গে। ঘটনাস্থলেও যেতে পারেন তদন্তকারীরা। এই দলের সামনে এখন অনেকগুলি প্রশ্ন রয়েছে। শুক্রবারে রাতে ওই তরুণী হস্টেলে ঢুকলেন কী করে? বলা হচ্ছে তরুণীকে রেজিস্টারে সই করানো হয়নি। সেক্ষেত্রে কার নির্দেশে সই করেননি তিনি? অভিযুক্ত দ্বিতীয় বর্ষের ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া কতটা প্রভাবশালী? সব কিছুই খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। সূত্র মারফত খবর, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হচ্ছে।

Advertisement
বান্ধবীদের ক্যাম্পাসে নিয়ে আসত পরমানন্দ, IIM জোকায় ধর্ষণ কাণ্ডেও মনোজিত্‍-মডেল? IIM জোকা কাণ্ডে সমানে আসছে পরমানন্দের আরও কীর্তি

আইআইএম জোকা কাণ্ডে তদন্তে এবার  ৯ সদস্যের সিট গঠন করেছে রাজ্য সরকার।  একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে বিশেষ তদন্তকারী দলটি। তারা কথা বলবেন নির্যাতিতার সঙ্গে। ঘটনাস্থলেও যেতে পারেন তদন্তকারীরা। এই দলের সামনে এখন অনেকগুলি প্রশ্ন রয়েছে। শুক্রবারে রাতে ওই তরুণী হস্টেলে ঢুকলেন কী করে? বলা হচ্ছে তরুণীকে রেজিস্টারে সই করানো হয়নি। সেক্ষেত্রে কার নির্দেশে সই করেননি তিনি? অভিযুক্ত দ্বিতীয় বর্ষের ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া কতটা প্রভাবশালী? সব কিছুই খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। সূত্র মারফত খবর, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হচ্ছে। 

নজরে অভিযুক্তের ইনস্টাগ্রাম 
জোকা আইআইএম-এ মনোবিদকে যৌন নির্যাতনে এবার তদন্তকারী অফিসারদের নজরে অভিযুক্ত পরমানন্দ তোঁয়াওয়ারের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলও। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে অভিযুক্ত পরমানন্দর কোনও মানসিক সমস্যা ছিল না। তাহলে তরুণী মনোবিদকে কাউন্সেলিংয়ের কথা বলে কেন ক্যাম্পাসে ডেকেছিলেন পরমানন্দ। অভিযুক্তর পরিবারের সদস্যদের হরিদেবপুর থানায় ডেকে মানসিক সমস্যার কোনও পুরনো রেকর্ড রয়েছে কিনা জানতে চান তদন্তকারী অফিসাররা। ইতিমধ্যে হস্টেলের সিসিটিভি ফুটেজ চেয়েছে পুলিশ। ওই তরুণী ক্যাম্পাসে কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, তা জানতে চান তদন্তকারী অফিসাররা। রাস্তায় লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ জানতে পেরেছে তরুণী আইআইএম-র হস্টেলে ঢুকেছিলেন।  হস্টেলের যে ঘরে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে , সেই রুম সিল করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে নুমনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা ।ইতিমধ্যেই অভিযুক্তের পোশাক বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ধৃত ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়ার মেডিকো লিগাল টেস্ট করানো হবে বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে।

কেন ডাকা হয়েছিল তরুণীকে
নির্যাতিতা তরুণী অভিযোগ করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় হওয়ার পর কাউন্সেলিংয়ের জন্যই তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত। লাঞ্চে দেওয়া পিৎজা এবং জল খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। তখনই তাঁকে যৌন নির্যাতন করা হয়।  আইআইএম জোকা ক্যাম্পাসে ওই তরুণী মনোবিদ ছিলেন ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। ধর্ষণের ঘটনায় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। আইআইএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারিণী একসঙ্গে বাইরে থেকে একটি ক্যাব ধরে ক্যাম্পাসে আসেন। ক্যাম্পাসের নিয়ম মেনে সিকিউরিটি অফিসারকে আগাম মেল করে অভিযুক্ত জানিয়েছিল যে, তার এক বন্ধু দুপুরে ক্যাম্পাসে আসছেন। বিকেল ৩টে ১০ মিনিট নাগাদ তরুণী ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে একটি ক্যাব বুক করে বেরিয়ে যান।

Advertisement

অভিযুক্তের আরও কীর্তি
এদিকে আইআইএম জোকার ক্যাম্পাসে তরুণী মনোবিদের যৌন নিগ্রহ ও তাঁর ধর্ষণের ঘটনার পর অভিযুক্ত পরমানন্দ মহাবীর টোপ্পান্নাবার ওরফে পরমানন্দ জৈনের একের পর এক  কীর্তি  সামনে এসেছে পুলিশের কাছে।  পুলিশ আধিকারিকদের কাছে খবর, ওই কলেজ ক্যাম্পাসে মহিলা তথা বান্ধবীদের ডেকে নিয়ে আসা পরমানন্দর কাছে নতুন নয়। এর আগেও তার হাত ধরে একাধিক মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকেছিলেন বলে খবর পুলিশের কাছে। পুলিশ জেনেছে, এমবিএ-র দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র পরমানন্দ কলেজের একটি কমিটিতেও ছিল। সেই সূত্র ধরেই কলেজে 'দাদাগিরি' ফলানোর চেষ্টা করত সে। নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে রেখেছিল। কোনও নিরাপত্তারক্ষী কথা না শুনলে তাঁকে পরমানন্দের হুমকির মুখে পড়তে হত। তাই কোনও বহিরাগত সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে কলেজে নিয়ে এলেও পরমানন্দের  নির্দেশে  কলেজের গেটের রেজিস্টার খাতায় ওই  অতিথির কোনও নাম লেখা হত না। বিভিন্ন  কীর্তির কারণে পরমানন্দর বিরুদ্ধে আইআইএম জোকা কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করে। সেই কারণেই পরমানন্দ  কলেজের ভোটে দাঁড়াতে পারেনি। তবে তাতে রোয়াব কমেনি এই ম্যানেজমেন্ট ছাত্রের। মহিলাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই পরমানন্দ নিজের ভুয়ো 'জৈন' পদবি ব্যবহার করত। তবে সে অত্যন্ত মেধাবী। চারটি ভাষায় দক্ষ পরমানন্দ ম্যানেজমেন্ট প্রবেশিকার পরীক্ষায়  পেয়েছিল ৯৯.৭৩ শতাংশ।  পরমানন্দ ২০২২ সালে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংও পাশ করে।  

বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে পরমানন্দ।  কেনই-বা অভিযুক্ত দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রের  মনোবিদের দরকার হল, তা নিয়েই  পুলিশ সন্দিহান। আবার অভিযোগকারিণী সত্যিই পেশাদার মনোবিদ কি না, তিনি কোথা থেকে কোর্স করেছেন, তাও পুলিশ জানার চেষ্টা করছে। অভিযোগকারিণীর বাবা ‘স্টাডি মেটেরিয়াল’-এর জন্য আইআইএম জোকায় তাঁর মেয়ে যান বলে দাবি করেন, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।  নির্যাতিতার বাবার বয়ানও তদন্তকারীদের কাছে তদন্তের বিষয় হয়ে উঠেছে। কারণ তিনি অভিযোগের থেকে দূরে সরে দাঁড়িয়ে অন্য কথা বলেছেন। দাবি, তাঁর মেয়েই তাঁকে জানিয়েছেন যে ধর্ষণের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। অভিযোগকারিনীর বাবার বক্তব্য, তাঁর মেয়ের উপর কোনও অত‌্যাচার হয়নি অথবা কেউ মেয়ের সঙ্গে খারাপ ব‌্যবহারও করেনি।  ধর্ষণের অভিযোগ, নাকি বাবার বয়ান, কোনটা সত্যি? তা খতিয়ে দেখে সত্যিটা বার করাই এখন চ্যালেঞ্জ বিশেষ তদন্তকারী দলের কাছে।


 

POST A COMMENT
Advertisement