ফ্যাক্ট চেক: জঙ্গিদের দেহ টানার ২০১৮ সালের ভিডিও ছড়ালো পহেলগাঁও হামলার জবাব বলে

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল উভয় ভিডিও-ই ২০১৮ সালের এবং সাম্প্রতিক কোনও ঘটনার নয়। 

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: জঙ্গিদের দেহ টানার ২০১৮ সালের ভিডিও ছড়ালো পহেলগাঁও হামলার জবাব বলে

পহেলগাঁও-তে নারকীয় জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুটি ভিডিও-র একটি কোলাজ বেশ ভাইরাল হচ্ছে। যেখানে সেনার পোশাকে থাকা ব্য়ক্তিদের দুটি দেহ বেঁধে টেনে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। 

ভিডিও দুটির কোলাজ শেয়ার করে অনেকেই ইঙ্গিত করছেন যে পহেলগাঁও হামলার প্রেক্ষিতে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে এমনই অ্যাকশন গ্রহণ করেছে ভারতীয় সেনা। ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "ট্রিটমেন্ট শুরু হয়েগেছে। ভারতীয় সেনাদের স্যালুট জানাই এত সুন্দর দৃশ্য দেখানোর জন্য।"

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল উভয় ভিডিও-ই ২০১৮ সালের এবং সাম্প্রতিক কোনও ঘটনার নয়। 

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে 

ফেসবুকে পোস্ট হওয়া ক্লিপের প্রথম অংশে যে ভিডিও রয়েছে, তার থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে খোঁজা হলে আসল ভিডিওটির অংশ খুঁজে পাওয়া যায় এবিপি নিউজের একটি প্রতিবেদনে। 

এবিপি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে এই ভিডিও প্রতিবেদনটি আপলোড করা হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর। প্রায় ৫ মিনিটের বেশি দীর্ঘ এই ভিডিওটির ৪ মিনিট ৩৬ মিনিটের মাথায় হুবহু একই ফ্রেম দেখা যাবে যা বর্তমানে ভাইরাল হয়েছে। 

ভিডিওটির বিবরণে লেখা হয়, ওইদিন জম্মুর কাকরিয়াল এলাকায় জইশ-ই-মহম্মদের তিন জঙ্গিকে নিকেশ করেন নিরাপত্ত বাহিনীর সদস্যরা। এই সংঘর্ষে আহত হন ১২ সেনা সদস্যও। জম্মুর তৎকালীন ইন্সপেক্টর জেনারেল এসডি সিং এই তথ্য নিশ্চিত করেন। যা থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে ভাইরাল ভিডিও-র প্রথম অংশটির সঙ্গে গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার কোনও সম্পর্ক নেই। 

এরপর দ্বিতীয় ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে তার উৎস খোঁজা হলে ওই একই ভিডিও জ়ি নিউজের মারাঠি চ্য়ানেল জি ২৪ তাস-এ পাওয়া যায়। এখানে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছিল, জঙ্গিদের দেহ এভাবে টেনে নিয়ে যাওয়ার কারণে জম্মু কাশ্মীরের মানবাধিকার কমিশন প্রশ্ন তুলেছিল। 

Advertisement

পরবর্তী সময়ে এই বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করে ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরের একটি এনডিটিভি রিপোর্ট পাওয়া যায়। সেখানে সন্ত্রাসীদের দেহ টেনে নিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে পাল্টা সেনার পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করা হয়। 

সেনা জেনারেল ম্যাথসন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, "সন্ত্রাসীরা তাদের দেহের চারপাশে আইইডি (বিস্ফোরক সামগ্রী) ও গ্রেনেড বেঁধে রাখে, এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা যদি মৃতদেহ তুলে নেয় তখন সেটা বিপজ্জনক হতে পারে। সক্রিয় আইইডি বা অন্যান্য বিস্ফোরক থেকে নিজেদের বাঁচাতে দড়ি দিয়ে মৃতদেহ টেনে আনা সেনাবাহিনীর এক ধরনের অনুশীলনের মধ্যেই পড়ে।"

তবে এ কথা সত্যি যে পেহেলগাঁও হামলার পর দিন অর্থাৎ ২৩ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের বারামুলা জেলার উরিতে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করার সময় সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে দুই জঙ্গি

এর থেকে পরিষ্কার হয়ে যায়, উভয় ভিডিও-র সঙ্গেই সাম্প্রতিক পহেলগাঁও হামলার কোনও সম্পর্ক নেই। বিভ্রান্তিকর দাবিতে ভিডিওগুলি ছড়ানো হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পহেলগাঁও হামলার পর ভারতীয় সেনা কীভাবে জঙ্গিদের নিকেশ করেছে। 

ফলাফল

ভাইরাল দুটি ভিডিও ২০১৮ সালের এবং জইশ-ই-মহম্মদের তিন জঙ্গি নিকেশের। এর সঙ্গে পহেলগাঁও হামলার কোনও সম্পর্ক নেই। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement